শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ – সম্পূর্ণ গাইড

আপনার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে জানুন জন্ম থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ।

শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। জন্মের প্রথম দিন থেকে শুরু করে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর বিভিন্ন সময়সূচি অনুযায়ী নির্দিষ্ট টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশে শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ সরকারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও WHO-এর নির্দেশনা অনুসারে নির্ধারিত হয়েছে, যাতে প্রতিটি শিশু প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষিত থাকে।

এই ব্লগে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব — কোন বয়সে কোন টিকা দেওয়া উচিত, নবজাতকের প্রথম টিকা, ইপিআই প্রোগ্রাম, সরকারী নির্দেশিকা এবং টিকা নেওয়ার পর শিশুর যত্ন। এটি অভিভাবকদের জন্য একটি সহজ ও প্রামাণ্য গাইড হিসেবে কাজ করবে, যাতে তারা নিশ্চিতভাবে তাদের শিশুকে স্বাস্থ্যসম্মত ও সুরক্ষিত রাখার সব ব্যবস্থা নিতে পারেন।

পোস্ট সূচীপত্র

টিকা কেন জরুরি?

টিকা আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। নবজাতক ও শিশুদের অনেক সংক্রামক রোগ যেমন যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, হেপাটাইটিস-বি, টিটেনাস, হাম (Measles) ইত্যাদি প্রতিরোধে টিকার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় এবং এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে

নবজাতকের প্রথম টিকা

জন্মের পরপরই শিশুকে নিম্নোক্ত টিকাগুলো দেওয়া হয়:

টিকার নাম কখন দিতে হবে উদ্দেশ্য
বিসিজি (BCG) জন্মের পরপর যক্ষ্মা প্রতিরোধে
ওরাল পোলিও (OPV-0) জন্মের পর 14 দিনের মধ্যে পোলিও রোগ প্রতিরোধে
হেপাটাইটিস-বি (Hep-B) জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হেপাটাইটিস-বি প্রতিরোধে

বয়সভিত্তিক শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী (EPI Schedule ২০২৫ অনুযায়ী)

শিশুর বয়স টিকার নাম প্রতিরোধক রোগ
৬ সপ্তাহ DPT-1, OPV-1, Hep-B-1, PCV-1, Rota-1 ডিপথেরিয়া, পোলিও, টিটেনাস, হেপাটাইটিস-বি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া
১০ সপ্তাহ DPT-2, OPV-2, Hep-B-2, PCV-2, Rota-2 পুনরায় সুরক্ষা নিশ্চিত
১৪ সপ্তাহ DPT-3, OPV-3, Hep-B-3, PCV-3, IPV পূর্ণ সুরক্ষা
৯ মাস MR (Measles & Rubella), Vitamin A হাম ও রুবেলা প্রতিরোধে
১৫ মাস MR-2 (দ্বিতীয় ডোজ) রোগ প্রতিরোধ শক্তি স্থায়ী করতে

🔹 DPT = ডিপথেরিয়া, পার্টুসিস, টিটেনাস
🔹 PCV = Pneumococcal Conjugate Vaccine
🔹 IPV = Inactivated Polio Vaccine
🔹 Rota = Rotavirus Vaccine

সরকারি টিকা প্রোগ্রাম ও টিকা কেন্দ্র

বাংলাদেশে শিশু টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়
প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও সরকারি হাসপাতালে টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।

✔️ টিকাদান কেন্দ্রগুলো সাধারণত সপ্তাহে নির্দিষ্ট দিনে খোলা থাকে।
✔️ EPI কার্ড নিয়ে গেলে টিকার সময়সূচী ও দেওয়া ডোজ সংরক্ষণ করা হয়।
✔️ টিকা মিস হলে পরবর্তী নির্ধারিত তারিখে দেওয়া সম্ভব, তবে যত দ্রুত সম্ভব নেওয়াই ভালো।

👉 স্বাস্থ্য অধিদপ্তর – ইপিআই প্রোগ্রাম অফিসিয়াল সাইট

শিশুর টিকা কার্ড কেন দরকার?

প্রতিটি শিশুর টিকা দেওয়ার রেকর্ড রাখতে EPI কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এতে শিশুর নাম, জন্মতারিখ, প্রতিটি টিকা নেওয়ার তারিখ এবং পরবর্তী টিকা দেওয়ার সময় লেখা থাকে।
কার্ড হারিয়ে গেলে নিকটস্থ টিকা কেন্দ্রে গিয়ে নতুন কার্ড সংগ্রহ করা যায়।

২০২৫ সালের নতুন সংযোজিত টিকা

বাংলাদেশ সরকার ২০২৫ সালে শিশু টিকাদান প্রোগ্রামে কিছু নতুন টিকা যুক্ত করেছে, যেমন:

  • Rotavirus Vaccine (Rota) → ডায়রিয়া প্রতিরোধে
  • PCV Vaccine → নিউমোনিয়া প্রতিরোধে
  • IPV (Inactivated Polio Vaccine) → পোলিও সম্পূর্ণ নির্মূলের লক্ষ্যে

এগুলো শিশুর মৃত্যুহার কমাতে বড় ভূমিকা রাখছে।

টিকা দেওয়ার পর যত্ন নেওয়ার নিয়ম

১. টিকা নেওয়ার পর শিশুর হালকা জ্বর বা অস্থিরতা হতে পারে – এটি স্বাভাবিক।
২. গরম পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে ইনজেকশন জায়গায় হালকা সেঁক দিতে পারো।
৩. কোনো র‍্যাশ বা অস্বাভাবিক জ্বর থাকলে দ্রুত ডাক্তার দেখাও।
৪. শিশুকে পর্যাপ্ত পানি ও বুকের দুধ দাও।

শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ

বাংলাদেশে শিশুদের জন্য সরকার নির্ধারিত টিকা দেওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী রয়েছে। এই সময়সূচী অনুযায়ী জন্মের পর থেকে নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বিভিন্ন টিকা দেওয়া হয়, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে এবং মারাত্মক রোগ থেকে রক্ষা করে। এই কর্মসূচিটি EPI (Expanded Programme on Immunization) নামে পরিচিত, যা পরিচালনা করে বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

শিশুর টিকা দেওয়ার সময়সূচী

শিশুর জন্মের পর থেকেই নির্দিষ্ট তারিখে টিকা দেওয়া শুরু হয়। সাধারণত প্রথম টিকা দেওয়া হয় জন্মের পরপরই, এরপর এক মাস, দুই মাস, চার মাস, নয় মাস, এবং পনেরো মাস বয়সে অন্যান্য টিকা দেওয়া হয়। টিকার এই সময়সূচী শিশুর বয়স অনুযায়ী ঠিকভাবে অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনো টিকা বাদ না পড়ে।

শিশুর টিকার সময়সূচি ২০২৪

২০২৪ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত টিকা সময়সূচী অনুযায়ী—

  • জন্মের সাথে সাথে: বিসিজি, ওরাল পোলিও (OPV-0), হেপাটাইটিস বি
  • ৬ সপ্তাহ বয়সে: পেন্টাভ্যালেন্ট-১, OPV-1, PCV-1, রোটা-১
  • ১০ সপ্তাহ বয়সে: পেন্টাভ্যালেন্ট-২, OPV-2, PCV-2, রোটা-২
  • ১৪ সপ্তাহ বয়সে: পেন্টাভ্যালেন্ট-৩, OPV-৩, IPV, PCV-৩
  • ৯ মাস বয়সে: মিজেলস-রুবেলা (MR-1)
  • ১৫ মাস বয়সে: মিজেলস-রুবেলা (MR-২), টাইফয়েড টিকা

শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ 2025

২০২৫ সালের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন কিছু টিকা যুক্ত করেছে যেমন রোটাভাইরাস, PCV, এবং IPV। এই আপডেটেড সময়সূচী শিশুরা আরও বেশি রোগ থেকে সুরক্ষা পাবে। বিশেষ করে রোটাভাইরাস টিকা শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশে শিশুদের টিকা দেওয়ার সম্পূর্ণ সময়সূচী

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পূর্ণ সময়সূচী অনুযায়ী জন্ম থেকে ১৫ মাস পর্যন্ত শিশুকে মোট ১২টি ভিন্ন টিকা দেওয়া হয়। এই সময়সূচীটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিনামূল্যে অনুসরণ করা হয়। প্রতিটি টিকার তারিখ টিকা কার্ডে লিপিবদ্ধ করা হয়।

ইপিআই টিকা সূচি বাংলাদেশ

EPI বা Expanded Programme on Immunization হচ্ছে বাংলাদেশের অন্যতম সফল স্বাস্থ্য উদ্যোগ। এটি ১৯৭৯ সালে শুরু হয় এবং এখন দেশের প্রতিটি অঞ্চলে কার্যকরভাবে চলছে। ইপিআই সূচিতে মোট ১৩টি প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে টিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেমন — টিটেনাস, ডিপথেরিয়া, হুপিং কফ, পোলিও, হেপাটাইটিস বি, নিউমোনিয়া, এবং মিজেলস।

বাংলাদেশ ইপিআই প্রোগ্রাম

বাংলাদেশ ইপিআই প্রোগ্রামের মূল লক্ষ্য হলো ১ বছরের কম বয়সী সব শিশুকে এবং গর্ভবতী মায়েদের টিকার আওতায় আনা। এই প্রোগ্রামটি WHO, UNICEF এবং GAVI-এর সহায়তায় পরিচালিত হয়। এটি দেশের শিশু মৃত্যুর হার কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশ ইপিআই প্রোগ্রাম ২০২৫

২০২৫ সালে ইপিআই প্রোগ্রামে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন ও নতুন টিকা অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকা রিমাইন্ডার সিস্টেম চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, যাতে কোনো অভিভাবক শিশুর টিকা মিস না করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টিকা গাইডলাইন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (DGHS) শিশুদের টিকা দেওয়ার নিয়ম, সময়সূচী, ও নির্দেশিকা প্রতি বছর হালনাগাদ করে। এই গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নির্দিষ্ট দিনে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

WHO টিকা নির্দেশিকা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সকল দেশের মতো বাংলাদেশকেও নির্দিষ্ট ইমিউনাইজেশন নীতিমালা অনুসরণ করতে নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী টিকাদান প্রোগ্রামগুলো বাস্তবায়ন করা হয়, যাতে প্রতিটি শিশু প্রাথমিক প্রতিরোধমূলক যত্ন পেতে পারে।

জাতক পর্যায়ের টিকা

জাতক পর্যায়ে (নবজাতক সময়েই) কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিকা দেওয়া হয় যেমন — বিসিজি (BCG), হেপাটাইটিস বি, এবং ওরাল পোলিও (OPV-0)। এগুলো শিশুর জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দেওয়া হলে সর্বাধিক কার্যকর হয়।

নবজাতকের টিকা সময়

নবজাতকের জন্মের পর ০–৭ দিনের মধ্যে প্রথম দফার টিকা দেওয়া হয়। এই সময়ের টিকাগুলো শিশুর ভবিষ্যৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা

নবজাতক শিশুর প্রথম টিকা সাধারণত BCG (যক্ষ্মা প্রতিরোধক), Hepatitis B, এবং OPV-0। এই টিকাগুলো শিশুর জন্মের পরপরই স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে দেওয়া হয়।

জন্মের পর শিশুর টিকা

জন্মের পরপরই শিশুকে প্রথম তিনটি টিকা দেওয়া হয় —

  1. BCG (যক্ষ্মা প্রতিরোধ)
  2. OPV-0 (পোলিও প্রতিরোধ)
  3. Hepatitis B (লিভার সংক্রমণ প্রতিরোধ)

এই টিকাগুলো না দিলে শিশুর ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হতে পারে এবং বিভিন্ন সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

নবজাতকের প্রথম টিকা কোনটি?

নবজাতকের জন্মের পর প্রথম যে টিকাগুলো দেওয়া হয়, তার মধ্যে প্রধান হলো বিসিজি (BCG), ওরাল পোলিও (OPV-0) এবং হেপাটাইটিস বি (Hepatitis B)। সাধারণত জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই টিকাগুলো দেওয়া হয়। বিসিজি টিকা শিশুকে যক্ষ্মা থেকে রক্ষা করে, আর পোলিও ও হেপাটাইটিস বি টিকা ভাইরাসজনিত গুরুতর সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

জন্মের পর কোন টিকা দিতে হয়

শিশুর জন্মের পরপরই নিচের তিনটি টিকা অবশ্যই দিতে হয়:

  1. BCG (যক্ষ্মা প্রতিরোধক)
  2. OPV-0 (পোলিও প্রতিরোধক)
  3. Hepatitis B (লিভার সংক্রমণ প্রতিরোধ)

এই টিকাগুলো জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে দেওয়া হয়।

শিশুর প্রথম টিকা কখন দিতে হয়

শিশুর প্রথম টিকা জন্মের সাথে সাথেই বা সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হয়। এটি শিশুর ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রথম ধাপ। এই সময়ে টিকা না দিলে শিশুর দেহে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে পারে।

শিশুর টিকা তালিকা

বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নির্ধারিত শিশুর টিকা তালিকায় রয়েছে —

  • BCG (যক্ষ্মা)
  • OPV (পোলিও)
  • Pentavalent (ডিপথেরিয়া, হুপিং কফ, টিটেনাস, হেপাটাইটিস বি, হিব)
  • PCV (নিউমোনিয়া)
  • Rotavirus
  • IPV (ইনঅ্যাকটিভেটেড পোলিও ভ্যাকসিন)
  • MR (হাম-রুবেলা)
  • Typhoid টিকা

এই টিকাগুলো নির্দিষ্ট বয়স অনুযায়ী দেওয়া হয় এবং টিকা কার্ডে তারিখ লিপিবদ্ধ থাকে।

নবজাতক থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর টিকা তালিকা

নবজাতক থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য মোট ১২–১৪টি টিকা নির্ধারিত রয়েছে।

  • জন্মের পর: BCG, OPV-0, Hepatitis B
  • ৬ সপ্তাহে: Pentavalent-1, PCV-1, OPV-1, Rotavirus-1
  • ১০ সপ্তাহে: Pentavalent-2, PCV-2, OPV-2, Rotavirus-2
  • ১৪ সপ্তাহে: Pentavalent-3, PCV-3, OPV-3, IPV
  • ৯ মাসে: MR-1
  • ১৫ মাসে: MR-2, Typhoid টিকা

৫ বছর পর্যন্ত বুস্টার ডোজও দেওয়া হয়, যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করে।

শিশুর টিকা সময়সূচী অনুযায়ী কোন মাসে কোন টিকা দেওয়া হয়

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই (EPI) সময়সূচী অনুযায়ী:

  • জন্মে: BCG, OPV-0, Hepatitis B
  • ১.৫ মাসে: Pentavalent-1, PCV-1, OPV-1, Rotavirus-1
  • ২.৫ মাসে: Pentavalent-2, PCV-2, OPV-2, Rotavirus-2
  • ৩.৫ মাসে: Pentavalent-3, PCV-3, OPV-3, IPV
  • ৯ মাসে: MR-1
  • ১৫ মাসে: MR-2, Typhoid

এই সময়সূচী অনুযায়ী টিকা না দিলে শিশুর রোগ প্রতিরোধ দুর্বল হতে পারে।

শিশুর টিকা ক্যালেন্ডার

শিশুর টিকা ক্যালেন্ডার হচ্ছে একটি সময়ভিত্তিক টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা, যা স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা কার্ডে নথিভুক্ত করে। এতে জন্ম থেকে শুরু করে পনেরো মাস পর্যন্ত প্রতিটি টিকার তারিখ উল্লেখ থাকে, যাতে অভিভাবকরা কোনো টিকা মিস না করেন।

শিশুর ইমিউনাইজেশন সময়সূচী

শিশুর ইমিউনাইজেশন সময়সূচী (Immunization Schedule) হল একটি বৈজ্ঞানিকভাবে নির্ধারিত তালিকা, যেখানে কোন বয়সে কোন টিকা দিতে হবে তা নির্ধারণ করা থাকে। এই সময়সূচী শিশুর ইমিউন সিস্টেমের বিকাশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে তৈরি করা হয়।

শিশুর ভ্যাকসিন সময়সূচী

বাংলাদেশে শিশুর ভ্যাকসিন সময়সূচী WHO ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত। এতে মোট ৮ ধাপে শিশুকে টিকা দেওয়া হয়। প্রতিটি ভ্যাকসিন নির্দিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয় এবং শিশুর জীবনভর স্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।

টিকাদান ক্যালেন্ডার বাংলাদেশ

বাংলাদেশে প্রতি বছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নতুন টিকাদান ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে। এতে নতুন সংযোজিত টিকা যেমন Rotavirus, PCV, এবং IPV অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২৫ সালের ক্যালেন্ডারে আরও উন্নত রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

শিশু স্বাস্থ্য টিকাসূচি

শিশু স্বাস্থ্য টিকাসূচি হচ্ছে সরকারি ও আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার যৌথভাবে প্রণীত টিকা প্রদানের সময়সূচী। এতে শিশুর জন্ম থেকে পনেরো মাস পর্যন্ত বাধ্যতামূলক টিকাগুলোর তালিকা থাকে। এই টিকাগুলো শিশুর জীবন রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অপরিহার্য।

টিকা দেওয়ার বয়স

প্রতিটি টিকার নির্দিষ্ট বয়স রয়েছে। যেমন —

  • BCG: জন্মের পরপর
  • Pentavalent: ৬, ১০, ১৪ সপ্তাহে
  • MR: ৯ ও ১৫ মাসে
  • Typhoid: ১৫ মাসে

এই বয়সে টিকা না দিলে টিকার কার্যকারিতা কমে যেতে পারে, তাই নির্ধারিত বয়সেই টিকা দেওয়া জরুরি।

বাচ্চাদের কত কত মাসে টিকা দিতে হয়

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, বাচ্চাদের সাধারণত নিচের মাসগুলোতে টিকা দেওয়া হয়:

  • জন্ম
  • ১.৫ মাস
  • ২.৫ মাস
  • ৩.৫ মাস
  • ৯ মাস
  • ১৫ মাস

এভাবে ধাপে ধাপে টিকা সম্পন্ন হলে শিশুর শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়।

সরকারি টিকা প্রোগ্রাম

সরকারি টিকা প্রোগ্রাম বা EPI (Expanded Programme on Immunization) বাংলাদেশের একটি সফলতম স্বাস্থ্য উদ্যোগ। এই প্রোগ্রামটি বিনামূল্যে পরিচালিত হয় এবং দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন, উপজেলা, ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কার্যকর।

সরকারি হাসপাতালের শিশু টিকা সময়সূচী

সরকারি হাসপাতালগুলোতে নির্দিষ্ট দিনে শিশুদের টিকা দেওয়া হয়। সাধারণত সপ্তাহের দুই দিন (সোম ও বুধবার) টিকাদান কার্যক্রম চালানো হয়। সময়সূচী স্থানভেদে ভিন্ন হতে পারে, তবে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে শিশু টিকা কেন্দ্র

বাংলাদেশে প্রতিটি ইউনিয়ন, পৌরসভা, ও ওয়ার্ডে সরকারি টিকা কেন্দ্র রয়েছে যেখানে শিশুদের টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। এসব টিকা কেন্দ্র পরিচালনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ইপিআই (EPI) প্রোগ্রাম। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাতৃসদন, এবং কমিউনিটি ক্লিনিকেও নিয়মিত টিকাদান সেবা দেওয়া হয়।
শিশু টিকা কেন্দ্রগুলো সাধারণত সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা থাকে, এবং প্রতিটি টিকার তারিখ টিকা কার্ডে লিপিবদ্ধ করা হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টিকা সময়সূচী

প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম চলে। সাধারণত প্রতি সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার শিশু টিকাদান অনুষ্ঠিত হয়।
সময়সূচী: সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত
এখানে শিশুদের জন্য সব সরকারি টিকা যেমন BCG, Pentavalent, PCV, OPV, MR, Typhoid ইত্যাদি দেওয়া হয়।

ঢাকা শহরে শিশু টিকা সময়সূচী

ঢাকা শহরের সরকারি হাসপাতাল ও মাতৃসদনগুলোতে প্রতিদিনই টিকাদান কার্যক্রম চলে।
উদাহরণস্বরূপ:

  • মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল – সোম থেকে বৃহস্পতি, সকাল ৯টা–১টা
  • সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল – রবিবার ও বুধবার
  • মাতৃসদন আজিমপুর ও মিটফোর্ড হাসপাতাল – সপ্তাহে ৩ দিন
    এছাড়াও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে নির্দিষ্ট দিনে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম শিশু টিকা সময়

চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সপ্তাহে দুই দিন শিশু টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

  • চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল: প্রতি মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার
  • সিভিল সার্জন অফিস পরিচালিত ক্লিনিকগুলোতে: রবিবার ও বুধবার
    সমস্ত টিকাই বিনামূল্যে দেওয়া হয় এবং WHO অনুমোদিত ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়।

গ্রামীণ এলাকায় টিকা দেওয়ার নিয়ম

গ্রামীণ এলাকায় টিকা দেওয়ার দায়িত্বে থাকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (CHCP)স্বাস্থ্য সহকারী (HA)। তারা নির্দিষ্ট দিনে গ্রামের স্কুল, ইউনিয়ন পরিষদ বা কমিউনিটি ক্লিনিকে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে।
গ্রামীণ অঞ্চলে টিকাদান কার্যক্রম সাধারণত মাসে দুইবার হয়, যাতে কোনো শিশুর টিকা বাদ না পড়ে।

বাংলাদেশে বিনামূল্যে টিকা কার্যক্রম

বাংলাদেশ সরকার শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই প্রোগ্রামটি WHO, UNICEF ও GAVI-এর সহায়তায় ১৯৭৯ সাল থেকে চলছে।
বর্তমানে দেশের প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন, ও ওয়ার্ডে বিনামূল্যে টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে ১৩টি প্রাণঘাতী রোগের টিকা দেওয়া হয়।

সরকারি হাসপাতালে টিকা কিভাবে দেওয়া হয়

সরকারি হাসপাতালে টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ —

  1. অভিভাবক শিশুর টিকা কার্ড নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান।
  2. দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী শিশুর বয়স অনুযায়ী টিকা নির্বাচন করেন।
  3. টিকা দেওয়ার পর তারিখ ও স্বাক্ষর টিকা কার্ডে লিপিবদ্ধ করা হয়।
  4. পরবর্তী টিকার তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়।
    সব টিকাই বিনামূল্যে ও WHO মানসম্পন্ন

বাংলাদেশে টিকা কিভাবে দেওয়া হয়

বাংলাদেশে টিকা দেওয়ার সময় শিশুদের বয়স, ওজন ও পূর্বের টিকা ইতিহাস বিবেচনা করা হয়। টিকা সাধারণত ইনজেকশন বা ওরাল (মুখে) দেওয়া হয়।
টিকাদানের সময় বিশেষায়িত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা দায়িত্ব পালন করেন, এবং সকল টিকা WHO অনুমোদিত শীতল পরিবেশে সংরক্ষণ করা হয়।

২০২৫ সালের নতুন শিশু টিকা সূচি

২০২৫ সালে বাংলাদেশে শিশু টিকাদান সূচিতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন সূচিতে এখন আরও কার্যকর Rotavirus, PCV এবং IPV টিকা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও ডিজিটাল টিকা কার্ড চালু হচ্ছে, যাতে অভিভাবকরা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকা তারিখ জানতে পারেন।

নতুন সংযোজিত টিকা (Rotavirus, PCV, IPV)

নতুন তিনটি সংযোজিত টিকা সম্পর্কে সংক্ষেপে —

  • Rotavirus টিকা: শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে।
  • PCV (Pneumococcal Vaccine): নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস থেকে রক্ষা করে।
  • IPV (Inactivated Polio Vaccine): পোলিও নির্মূলে সহায়ক।

এই তিনটি টিকা বাংলাদেশ ইপিআই প্রোগ্রামে ২০২৫ সালে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

টিকা দেওয়ার সর্বশেষ আপডেট বাংলাদেশ

বাংলাদেশে টিকাদান কার্যক্রমের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী,

  • ২০২৫ সালে Rotavirus টিকা সারা দেশে চালু করা হয়েছে।
  • EPI প্রোগ্রামে ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম সংযোজন করা হয়েছে।
  • প্রতি ওয়ার্ডে স্থায়ী টিকাকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
  • এবং WHO নির্দেশনা অনুযায়ী সব টিকা স্টোরেজে Cold Chain প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এই আপডেটের ফলে দেশের শিশুর টিকা কাভারেজ ৯৮% এর উপরে উন্নীত হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম সেরা সাফল্য।

WHO অনুমোদিত শিশুর টিকা ২০২৫

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০২৫ সালে শিশুদের জন্য যেসব টিকা অনুমোদন করেছে, তার মধ্যে রয়েছে BCG, OPV, Pentavalent (DPT-HepB-Hib), PCV, IPV, Rota Virus, MR ইত্যাদি। এই টিকাগুলো শিশুর দেহে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। WHO প্রতি বছর গবেষণা ও নতুন রোগের পরিস্থিতি অনুযায়ী টিকার তালিকা হালনাগাদ করে থাকে। বাংলাদেশও WHO অনুমোদিত এই টিকা সূচি অনুসরণ করে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে।

জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে কয়টি টিকা দেওয়া হয়?

বাংলাদেশের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি (EPI) অনুযায়ী মোট ১৩টি প্রধান টিকা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে BCG, OPV, Pentavalent, PCV, Rota Virus, IPV, MR, Td ইত্যাদি। এই টিকাগুলো জন্মের পর থেকে শিশুর ১৫ মাস বয়স পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী দেওয়া হয়।

শিশুদের মোট কয়টি টিকা দিতে হয়

একটি শিশুকে জন্ম থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত কমপক্ষে ১২–১৩টি টিকা দিতে হয়। প্রতিটি টিকা শিশুর শরীরকে ভিন্ন ভিন্ন রোগ যেমন ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, টিটেনাস, হেপাটাইটিস-বি, পোলিও, নিউমোনিয়া ও হাম থেকে রক্ষা করে।

শিশুদের টিকা কেন জরুরি

টিকা শুধু একটি শিশুকেই নয়, বরং পুরো সমাজকে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। টিকা নেওয়া শিশুর দেহে রোগের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, ফলে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলেও গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

শিশুর টিকা কেন জরুরি?

শিশুর জন্মের পর থেকেই তার রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। টিকা শিশুর ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। ফলে সে সহজে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয় না, এবং ভবিষ্যতে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

টিকা না দিলে ঝুঁকি

যদি শিশুকে টিকা না দেওয়া হয়, তবে সে গুরুতর রোগে আক্রান্ত হতে পারে যেমন — হাম, পোলিও, টিটেনাস বা নিউমোনিয়া। এসব রোগের কারণে স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা বা মৃত্যুর ঝুঁকিও থেকে যায়। টিকা না দেওয়া শিশুর মাধ্যমে অন্য শিশুরাও সংক্রমিত হতে পারে।

টিকা না দিলে কী হয়?

যে শিশু টিকা নেয় না, তার দেহে নির্দিষ্ট ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হয় না। ফলে সে সহজে সংক্রমিত হতে পারে, এমনকি মারাত্মক জটিলতায় পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পোলিও টিকা না পেলে আজীবন পঙ্গু হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

টিকা ও রোগ প্রতিরোধ

টিকা শরীরে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর দুর্বল অংশ প্রবেশ করিয়ে ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তোলে। ফলে ভবিষ্যতে একই জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলে শরীর তা চিনে নিয়ে দ্রুত প্রতিরোধ তৈরি করে, ফলে রোগ সংক্রমণ হয় না।

টিকা ও শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা

শিশুর প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মের পর থেকেই ধীরে ধীরে তৈরি হয়। টিকা দেওয়ার মাধ্যমে সেই প্রক্রিয়াটি আরও দ্রুত ও শক্তিশালী হয়। ফলে সে শ্বাসযন্ত্র, গ্যাস্ট্রিক, ডায়রিয়া বা ভাইরাল ইনফেকশন থেকে ভালোভাবে রক্ষা পায়।

শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

টিকার পাশাপাশি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দরকার পুষ্টিকর খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। টিকা এই প্রক্রিয়াকে বৈজ্ঞানিকভাবে শক্তিশালী করে, যাতে শিশুর শরীর দীর্ঘমেয়াদে রোগ প্রতিরোধে সক্ষম থাকে।

শিশু স্বাস্থ্য সচেতনতা

অভিভাবকদের টিকা সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। অনেকেই এখনো টিকার গুরুত্ব জানেন না বা ভুল ধারণা পোষণ করেন। শিশু স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা নিয়মিত ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছে।

নবজাতকের যত্ন

নবজাতকের যত্নের মূল ভিত্তি হলো — সঠিক টিকা, মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও উষ্ণতা বজায় রাখা। শিশুর জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই BCG ও OPV টিকা দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিশু স্বাস্থ্যসেবা

বাংলাদেশে এখন প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে EPI টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে নিয়মিত টিকা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হয়। এই সেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা

শিশুর সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য টিকা, পুষ্টি ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অপরিহার্য। সরকার ও WHO যৌথভাবে কাজ করছে যেন প্রতিটি শিশু প্রয়োজনীয় সব টিকা পায় এবং প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে মুক্ত থাকে।

টিকা দেওয়ার নিয়ম

টিকা দেওয়ার আগে শিশুর বয়স, ওজন ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী টিকা নেওয়া উচিত। টিকা দেওয়ার পর শিশুর সামান্য জ্বর বা ব্যথা হতে পারে, যা স্বাভাবিক। কোনো গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হয়।

শিশুর টিকা কখন ও কোথায় দেওয়া হয়

বাংলাদেশে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ওয়ার্ড পর্যায়ের EPI টিকাদান কেন্দ্র এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুযায়ী টিকা দেওয়া হয়। জন্মের পর থেকেই এই সময়সূচি অনুযায়ী শিশুর টিকা দেওয়া শুরু করতে হয়।

টিকা দেওয়ার পর শিশুর যত্ন নেওয়ার নিয়ম

টিকা দেওয়ার পর শিশুর শরীরে হালকা জ্বর, ব্যথা বা ফোলাভাব দেখা দিতে পারে। এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এই সময় শিশুকে পর্যাপ্ত পানি ও দুধ খাওয়াতে হবে, আরামদায়ক পোশাক পরাতে হবে এবং টিকা দেওয়া স্থানে চাপ না দিতে হবে। যদি জ্বর ২ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

টিকা দেওয়ার পর শিশুর জ্বর হলে কী করবেন?

টিকা নেওয়ার পর শিশুর শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা সক্রিয় হয়, তাই হালকা জ্বর হওয়া সাধারণ ঘটনা।

  • শিশুকে হালকা গরম পানিতে স্পঞ্জ করে দিন।
  • প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে প্যারাসিটামল সিরাপ দিতে পারেন।
  • শিশুকে ঠান্ডা পরিবেশে রাখবেন না।
  • পর্যাপ্ত ঘুম ও তরল খাবার দিন।

যদি জ্বর ৩ দিনের বেশি থাকে বা শিশুর খাওয়ার আগ্রহ না থাকে, তবে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।

শিশুর টিকা সময় মিস হলে কী করবেন?

যদি কোনো কারণে শিশুর নির্ধারিত টিকার সময় মিস হয়ে যায়, তাহলে চিন্তার কিছু নেই। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ EPI টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে কথা বলুন। তারা বাকি টিকাগুলো নতুন সময় অনুযায়ী পুনঃনির্ধারণ করে দেবে। দেরি হলেও টিকা সম্পন্ন করা জরুরি।

শিশুর টিকা কার্ড

শিশুর টিকা কার্ড হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ নথি যেখানে জন্মের পর থেকে সব টিকা দেওয়ার তারিখ ও বিবরণ লিপিবদ্ধ থাকে। এটি ভবিষ্যতে স্কুল ভর্তি, বিদেশ যাত্রা বা চিকিৎসার সময় প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাই কার্ডটি সবসময় নিরাপদে সংরক্ষণ করা উচিত।

শিশুর টিকা কার্ড হারালে কী করতে হবে?

যদি শিশুর টিকা কার্ড হারিয়ে যায়, তাহলে নিকটস্থ EPI টিকাদান কেন্দ্র বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করুন। তারা শিশুর পূর্ববর্তী টিকাদান রেকর্ড যাচাই করে নতুন কার্ড ইস্যু করে দেবে। এজন্য শিশুর জন্ম নিবন্ধন বা হাসপাতালের রেকর্ড সঙ্গে নিতে হবে।

কোন টিকা ঘরে দেওয়া যায়?

সাধারণত নবজাতকের টিকা বা শিশুদের টিকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দেওয়া হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন BCG বা OPV টিকা, সরকার অনুমোদিত প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী শিশুর বাড়িতে গিয়ে দিতে পারেন। কিন্তু নিজেরা ঘরে টিকা দেওয়া বিপজ্জনক — এতে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। তাই সবসময় সরকারি বা অনুমোদিত টিকাকেন্দ্রে টিকা দেওয়া শ্রেয়।

টিকাদান কর্মসূচির ইতিহাস

বাংলাদেশে Expanded Programme on Immunization (EPI) চালু হয় ১৯৭৯ সালে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) সহযোগিতায়। প্রথম দিকে মাত্র ৬টি টিকা দেওয়া হতো — বর্তমানে তা বেড়ে ১৩টি হয়েছে। এই কর্মসূচির ফলে শিশু মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে এবং বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সফল টিকাদান দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টিকা তালিকা

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (DGHS) প্রতি বছর টিকাদান সূচি হালনাগাদ করে। বর্তমানে ব্যবহৃত প্রধান টিকাগুলো হলো:
BCG, OPV, Pentavalent (DPT-HepB-Hib), PCV, Rota Virus, IPV, MR, Td।
এই তালিকা ও সময়সূচি DGHS-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (www.dghs.gov.bd) পাওয়া যায়।

জাতীয় টিকা দিবস কবে ২০২৪?

বাংলাদেশে প্রতি বছর ২৫ মার্চ জাতীয় টিকা দিবস উদযাপন করা হয়। এই দিনটিতে সরকার ও WHO যৌথভাবে সারাদেশে টিকাদান সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনা করে।

2025 টিকা দিবসের থিম কি?

২০২৫ সালের জাতীয় টিকা দিবসের থিম হচ্ছে —
“সবাই মিলে টিকা নেই, সুস্থ বাংলাদেশ গড়ি”
এই থিমের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি শিশুর কাছে টিকা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

শিশুর টিকা সম্পর্কিত সরকারি নির্দেশনা

বাংলাদেশ সরকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে শিশু টিকা সম্পর্কিত নির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে —

  • জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রথম টিকা দেওয়া।
  • নির্ধারিত সময়সূচি মেনে টিকা সম্পন্ন করা।
  • টিকা পরবর্তী প্রতিক্রিয়া হলে স্বাস্থ্যকর্মীকে জানানো।
    এই নির্দেশনাগুলো স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত প্রচার করা হয়।

শিশুর টিকাদান প্রোগ্রাম

শিশুর টিকাদান প্রোগ্রাম (EPI) বাংলাদেশে WHO ও UNICEF-এর সহযোগিতায় পরিচালিত হয়। প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে নির্ধারিত দিনে স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকা প্রদান করেন। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে দেশের ৯৫% শিশুই এখন নিয়মিত টিকা পাচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারের শিশু টিকা প্রোগ্রাম ২০২৫

২০২৫ সালে বাংলাদেশ সরকার নতুন ইপিআই (EPI) ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেছে, যেখানে Rotavirus, PCV, IPV সহ নতুন কিছু টিকা সংযোজন করা হয়েছে। লক্ষ্য হলো — “কোনো শিশুই যেন টিকা থেকে বঞ্চিত না হয়”।

ইমিউনাইজেশন ক্যালেন্ডার বাংলাদেশ

বাংলাদেশের ইমিউনাইজেশন ক্যালেন্ডার WHO অনুমোদিত সময়সূচি অনুযায়ী তৈরি। এতে জন্ম থেকে ১৫ মাস বয়স পর্যন্ত প্রতিটি টিকার তারিখ ও ডোজ উল্লেখ থাকে। এই ক্যালেন্ডারটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট এবং প্রতিটি হাসপাতালের EPI ইউনিটে পাওয়া যায়।

শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ – প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১: শিশুদের টিকা কেন দেওয়া হয়?

উত্তর: শিশুর জন্মের পর থেকেই তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। টিকা দেওয়ার মাধ্যমে শিশুর শরীরে বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি হয়। ফলে ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, পোলিও, হামসহ প্রাণঘাতী রোগ থেকে শিশু সুরক্ষিত থাকে।

প্রশ্ন ২: নবজাতকের প্রথম টিকা কোনটি?

উত্তর: নবজাতকের জন্মের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিসিজি (BCG) টিকা দেওয়া হয়, যা যক্ষ্মা প্রতিরোধে সহায়তা করে। একই সময় OPV-0Hepatitis B (বিগ টিকা) দেওয়াও সুপারিশকৃত।

প্রশ্ন ৩: জন্মের পর কোন কোন টিকা দিতে হয়?

উত্তর: জন্মের পরপরই শিশুকে সাধারণত ৩টি টিকা দেওয়া হয় —

  1. BCG (যক্ষ্মা প্রতিরোধে),
  2. OPV-0 (পোলিওর প্রথম ডোজ),
  3. Hepatitis B (লিভার সংক্রমণ প্রতিরোধে)।

প্রশ্ন ৪: শিশুর টিকা কবে থেকে শুরু হয়?

উত্তর: শিশুর টিকা জন্মের দিন থেকেই শুরু হয়। প্রথম ডোজের পর নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ৬ সপ্তাহ, ১০ সপ্তাহ, ১৪ সপ্তাহ এবং ৯ মাস বয়সে টিকা দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ৫: শিশুর টিকা দেওয়ার সময়সূচী অনুযায়ী কোন মাসে কোন টিকা দেওয়া হয়?

উত্তর:

  • জন্মের সময়: BCG, OPV-0
  • ৬ সপ্তাহ: OPV-1, Pentavalent-1, PCV-1, Rota-1
  • ১০ সপ্তাহ: OPV-2, Pentavalent-2, PCV-2, Rota-2
  • ১৪ সপ্তাহ: OPV-3, Pentavalent-3, IPV, PCV-3
  • ৯ মাস: MR-1 (হাম ও রুবেলা)
  • ১৫ মাস: MR-2 ও Td টিকা

প্রশ্ন ৬: শিশুর টিকা কার্ড কেন গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: টিকা কার্ডে শিশুর টিকা গ্রহণের তারিখ, পরবর্তী ডোজ এবং টিকা সম্পন্ন হওয়ার প্রমাণ থাকে। এটি ভবিষ্যতে স্কুল ভর্তি, চিকিৎসা বা বিদেশ যাত্রার সময় কাজে লাগে।

প্রশ্ন ৭: শিশুর টিকা কার্ড হারালে কী করবেন?

উত্তর: কার্ড হারালে নিকটস্থ EPI টিকা কেন্দ্র বা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগাযোগ করুন। সেখানে রেকর্ড দেখে নতুন কার্ড দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ৮: টিকা দেওয়ার পর শিশুর জ্বর হলে কী করবেন?

উত্তর: হালকা জ্বর স্বাভাবিক। শিশুকে হালকা গরম পানিতে স্পঞ্জ করুন, আরামদায়ক পোশাক পরান এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে প্যারাসিটামল দিন। যদি জ্বর ৩ দিনের বেশি থাকে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

প্রশ্ন ৯: টিকা না দিলে শিশুর কী ঝুঁকি হয়?

উত্তর: টিকা না দিলে শিশুর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে ওঠে না। এতে হাম, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হেপাটাইটিস বি ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা শিশুর প্রাণহানির কারণ হতে পারে।

প্রশ্ন ১০: শিশুর টিকা সময় মিস হলে কী করা উচিত?

উত্তর: নির্ধারিত সময় মিস হলে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ টিকা কেন্দ্রে যান। স্বাস্থ্যকর্মী শিশুর বাকি টিকা পুনরায় নির্ধারণ করে দেবে। টিকা দেরিতে হলেও সম্পন্ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন ১১: বাংলাদেশে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হয় কি?

উত্তর: হ্যাঁ, বাংলাদেশ সরকার EPI প্রোগ্রামের আওতায় সব শিশুকে বিনামূল্যে টিকা প্রদান করে। সরকারি হাসপাতাল, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক ও পৌর স্বাস্থ্য অফিসে এগুলো দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ১২: নতুন সংযোজিত টিকা (Rotavirus, PCV, IPV) কী?

উত্তর:

  • Rotavirus টিকা: শিশুকে ডায়রিয়া থেকে রক্ষা করে।
  • PCV টিকা: নিউমোনিয়া ও মেনিনজাইটিস প্রতিরোধ করে।
  • IPV টিকা: পোলিওর ঝুঁকি হ্রাস করে।
    এই টিকাগুলো ২০২৫ সালের ইপিআই ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৩: WHO অনুমোদিত শিশুর টিকা ২০২৫ সালে কোনগুলো?

উত্তর: WHO অনুমোদিত শিশুর টিকাগুলোর মধ্যে রয়েছে — BCG, OPV, IPV, Pentavalent, PCV, MR, Rota Virus, Td ইত্যাদি। এগুলো বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহার করছে।

প্রশ্ন ১৪: টিকা দেওয়ার পর শিশুর যত্ন নেওয়ার নিয়ম কী?

উত্তর:

  • টিকা দেওয়া স্থানে পানি লাগাবেন না।
  • শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও পানি দিন।
  • কোনো অস্বাভাবিকতা (জ্বর, ফোলাভাব, কান্না) হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

প্রশ্ন ১৫: শিশুর টিকা সম্পর্কিত সরকারি নির্দেশনা কোথায় পাওয়া যাবে?

উত্তর: সরকারি নির্দেশনা পাওয়া যায় —

প্রশ্ন ১৬: শিশুর টিকাদান প্রোগ্রাম কবে শুরু হয়েছিল?

উত্তর: বাংলাদেশে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি (EPI) শুরু হয় ১৯৭৯ সালে, WHO ও UNICEF-এর সহযোগিতায়। এখন দেশের ৯৫% এর বেশি শিশু নিয়মিত টিকার আওতায় এসেছে।

প্রশ্ন ১৭: ২০২৫ সালের টিকা দিবসের থিম কী?

উত্তর:
২০২৫ সালের টিকা দিবসের থিম হলো —
“সবাই টিকা নেব, নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ব।”
এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো দেশের প্রতিটি শিশুকে টিকার আওতায় আনা।

প্রশ্ন ১৮: শিশু টিকা কোথায় দেওয়া হয়?

উত্তর:

  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
  • ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র
  • শহরের ওয়ার্ড স্বাস্থ্য অফিস
  • কমিউনিটি ক্লিনিক
  • সরকারি হাসপাতাল ও মাতৃসদন

সব জায়গায় টিকা বিনামূল্যে দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ১৯: টিকাদান কর্মসূচির লক্ষ্য কী?

উত্তর: প্রতিটি শিশুকে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখা এবং শিশুমৃত্যুর হার কমানোই এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।

প্রশ্ন ২০: শিশুর টিকা সংক্রান্ত তথ্য জানার অফিসিয়াল উৎস কী?

উত্তর:
তথ্য যাচাই বা সময়সূচি জানতে নিচের সাইটগুলো ভিজিট করতে পারেন –

উপসংহার

শিশুদের সুস্থ ও সুরক্ষিত বড় হওয়া আমাদের সবার দায়িত্ব। জন্ম থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত নির্ধারিত টিকা দেওয়া হলে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং মারাত্মক সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। বাংলাদেশে সরকারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও WHO-এর নির্দেশনা অনুযায়ী শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অভিভাবকরা এই সময়সূচি মেনে টিকা সম্পন্ন করলে শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধে এক বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাই এখনই নিজের শিশুর টিকা কার্ড চেক করুন, সময়মতো টিকা নিশ্চিত করুন এবং সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নিন।

“আপনার শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে আজই শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ অনুযায়ী টিকা গ্রহণ করুন।”

সতর্কীকরণ বার্তা 

এই ব্লগের তথ্য শুধুমাত্র সাধারণ স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং শিশুদের টিকা দেওয়ার সময়সূচী বাংলাদেশ বিষয়ক নির্দেশনা প্রদানের উদ্দেশ্যে। চিকিৎসা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের জন্য অবশ্যই নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখার মধ্যে ভাষা জনিত কোন ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আজ এ পর্যন্তই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন 

গুগল নিউজে Multiseen সাইট ফলো করতে এখানে ক্লিক করুন তারপর ফলো করুন

প্রয়োজনীয় আরো পোস্ট সমূহ:-

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ম: সহজ ও কার্যকর টিপস

দাম্পত্য জীবনে রাসুল (স.)-এর শিক্ষা: সুখী ও বরকতময় সংসারের কৌশল

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ। আমি আমির হোসাইন, পেশায় একজন চাকরিজীবী এবং এই ওয়েবসাইটের এডমিন। চাকরির পাশাপাশি গত ১ বছর ধরে আমি আমার নিজস্ব ওয়েবসাইটে নিয়মিত লেখালেখি করছি এবং নিজস্ব ইউটিউব ও ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে কন্টেন্ট তৈরি করছি। বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমার লেখায় যদি কোনও ভুল থেকে থাকে, অনুগ্রহ করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply